Header Ads






সাথী হারা মন = পাঠ - ২ || Sathi-Hara-mon-2

সাতক্ষীরা জেলার বল্লী গ্রামের দক্ষিণ পাড়ায় মোশাররফ হোসেনের বাড়ি। তার পরিবারটি খুব ছোট এবং সুখী পরিবার।পরিবারে মাত্র চার জন সদস্য।স্বামী, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে। মেয়ে থাকলেও সে আর এ পরিবারে থাকে না কারণ প্রপ্ত বয়স্ক হওয়ায় বাবা-মা তাকে ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে। এখন পরিবারে মাত্র তিন জন। বাবা-মা ও ছেলে।পরিবারে কেও বসে থাকে না। কোনো না কোনো কাজে পরিবারের সবাই ব্যস্ত থাকে। বাবা পরের ক্ষেতে খামারে কাজ করে সংসার চালায়। মা সংসারের সমস্ত কাজ কর্ম একাই করে। মাঝে মাঝে লোকের নকশি কাঁথা সেলাই করে টাকা উপার্জন করে সে টাকা সংসারে কাজে লাগায়। তাদের একমাত্র ছেলে নাম মুন্না। সেও অবশ্যই কাজ করে। তবে পরের ক্ষেতে খামারে নয়। বাড়ির ক্ষেতে খামারে মাঝে মাঝে বাবাকে সাহায্য করে সে।মুন্না লেখাপড়া করে।মাঝে মাঝে দু-একদিন পকেট খরচার জন্য পরের ক্ষেতে খামারে কাজ করে। অবশ্যই বাবা কোনোদিন বলেনি যে-আমি তোর পকেট খরচার জন্য টাকা দিতে পারবোনা। তবুও কাজে যায় সে বন্ধুদের সাথে। হয়তো এ কারণেই যায় , সব সময় তো আর বাবার পকেট কাটা যায় না। আর বারবার বাবার কাছে টাকা চাইতেও তার বিবেক বাধা দেয়। তারা বড় লোক নয় তবে গরীবও নয়। তারা মধ্যবিত্ত পরিবারের মধ্যে একটি পরিবার। তাদের একটা মাটির তৈরি ঘর আছে।ঘরের উত্তর পাশে একটা কামরা আছে সেখানে মুন্না থাকে। আর বাবা-মা ঘরের বারন্দায় থাকে। ঘরের দক্ষিণ পাশে একটা গোয়াল ঘর আছে সেখানে তারা দু-একটা ছাগল গরু পালে। ঘরের সামনে আটো ছোট একটা রান্না ঘর আছে। আর আছে মাঝারি ধরনের একটা উঠান। বাড়ির উত্তরে কামরার পাশ দিয়ে এঁকে বেকেঁ চলে গেছে গ্রাম্য সড়ক। বহু দূরের মানুষ এ সড়ক দিয়ে বাজারে যাতায়াত করে। বাজারটা বেশি দূরে নয় আধা কিলোমিটারের মতো হবে। বাড়ির পূর্ব দিকে দু-চারটে বাড়ি পার হতেই চোখে পড়ে একটা গ্রাম্য প্রাইমারি স্কুল। স্কুলটির নাম কাঁঠালতলা বেসরকারি রেজিঃ প্রথমিক বিদ্যালয়। স্কুলটি কাঁঠালতলা গ্রামের মধ্যে তাই স্কুলটির নাম কাঁঠালতলা নাম করণ করা হয়েছে। মুন্না সেখানে লেখাপড়া করে। সেখান থেকে ২০০৫ সালে পঞ্চম শ্রেণী পাশ করে আখড়াখোলা মুকুন্দপুর দাখিল মাদ্রাসায় লেখাপড়ার জন্য চলে যায়।সেখান থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে আবার বল্লী মোঃ মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এসে ভর্তি হয় ২০১০ সালে এবং সেখানে সে লেখাপড়া করে। বাবা সারাদিন হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে মাও কম নয়।তাদের একমাত্র ছেলের কাজ শুধু লেখাপড়া করা। মাঝে মধ্যে বাবা-মাকে সাহায্য করে মুন্না। এভাবে তারা সুখের দিন কাটায়। মুন্না প্রতিদিন স্কুলে যায়। তার বয়স এখন তের বা চৌদ্দ। বয়সের সাথে সাথেই তার চলাফেরা দৈহিক গঠন পরিবর্তন হয়। সঙ্গে জীবনের কিছু চাওয়া-পাওয়ার বিকাশ ঘটে। যেমন- ভালো খাবার, ভালো পোশাক, ভালো থাকার জায়গা।এক কথায় সুন্দর ভোগ বিলাসিতা প্রয়োজন। আর এসব চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে অন্তরের চাওয়া-পাওয়া অন্যতম। মানুষের বয়সের সাথে মনের ভাবেরও একটা বিকাশ ঘটে। আসে মনে অফুরান্ত প্রেম, অফুরান্ত ভালোবাসা।মুন্নার জীবনেও এ সময়টা এসেছে।

পূর্ববর্তী

পরবর্তী

No comments

Powered by Blogger.