Header Ads






Namajer Niyom || ❝ নামাজের নিয়ম ❞

১. জায়নামাজের দোয়াঃ-

ক্বেবলামুখী হয়ে জায়নামাজের দাড়িয়ে নামাজ শুরুর পূর্বই এই দোয়া পড়তে হয়।
বাংলা উচ্চরন – ❝ ইন্নি ওযাজ্জাহতু ওয়াজ হিয়া লিল্লাজি, ফাত্বরস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বঅ হানি-ফাওঁ ওয়ামা-আনা মিনাল মুশরিকী-ন।❞
অর্থ হল : নিশ্চই আমি তারই দিকে মুখ করলাম, যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং বাস্তবিকই আমি মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত নই।



২. নামাজের নিয়ত

নামাজের ইচ্ছা করাই হচ্ছে নামাজের নিয়াত করা।মুখে উচ্চরণ করা জরুরী নয়, তবে মুস্তাহাব।
অতঃপর নিয়ত (ওয়াক্ত, রাকাত এবং ধরন অনুযায়ী) নিয়ত করা। তারপর তাকবীরে তাহরীমা- ❝ আল্লাহু আক বার ❞ অর্থ -আল্লাহ মহান। লে হাত



৩. সানা

(হাত বাধার পর এই দোয়া পড়তে হয় )
উচ্চরণ : ❝ সুবহা-নাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহাম দিকা ওয়াতাবারঅ কাস্ মুকা ওয়া তা’আ-লা জাদ্দুকা ওয়া লা-ইলা-হা গাইরুকা।❞
অর্থ হে আল্লাহ ! আমি আপনার পবিত্রতা ঘোষনা করছি এবং আপনার মহিমা বর্ণনা করছি। আপনার নাম বরকতময়, আপনার মাহাত্ম্য সর্বোচ্চ এবং আপনি ভিন্ন কেহই ইবাদতের যোগ্য নয়।



৪. তাআ’উজ পাঠ

তাআ’উজ পাঠঃ সানার পর পড়তে হয়- ❝ আউযুবিল্লা-হি মিনাশ শাইত্বা-নির রাজীম। ❞ অর্থ- বিতারিত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।

৫. তাসমিয়া পাঠঃ

তাসমিয়া পাঠঃ তাআ'উজ পাঠের পর পড়তে হয়- ❝ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। ❞ অর্থ- পরম দাতা ও দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

৫. সূরা ফাতিহা পাঠ

অতঃপর সূরা ফাতিহা পাঠ করে কোরআনের যে কোন স্থান হতে কয়েক আয়াত পাঠ করতে হয়। আয়াত বা সূরা পাঠের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা উত্তম। ফাতিহা পাঠ ও কোরআনের আয়াত বা অপর সূরা পাঠের পর ❝ আল্লাহু আক বার ❞ অর্থ -আল্লাহ মহান। বলে রুকুতে যেতে হয়।

৬. রুকুর তাসবীহ

রুকুর তাসবীহঃ রুকুতে পাঠ করতে হয়- ❝ সুবহা-না রব্ বি ইঃয়াল্ আ’জ্বীম। ❞ অর্থ-মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহাত্মতা ঘোষণা করছি।

৭. তাসমী

তাসমীঃ রুকু থেকে দাঁড়ানোর সময় পড়তে হয়- ❝ সামি আল্লা হুলিমান হামিদাহ। ❞ অর্থ-প্রশংসাকারীর প্রশংসা আল্লাহ শোনেন।

৮. তাহমীদ

তাহমীদঃ রুকু থেকে দাঁড়িয়ে পড়তে হয়- ❝ রাব্বানা লাকাল হামদ। ❞ অর্থ- হে আমার প্রভু, সমস্ত প্রশংসা আপনারই।

৯. সিজদার তাসবীহ

সিজদার তাসবীহঃ সিজদায় পড়তে হয়- ❝ সুবহা-না রাব্বিয়াল আ’লা। ❞ অর্থ- আমার প্রতিপালক যিনি সর্বশ্রেষ্ট, তারই পবিত্রতা বর্ণনা করছি।

১০. দু’সিজদার মাঝখানে পড়ার দোয়া

দু’সিজদার মাঝখানে পড়ার দোয়াঃ দুই সিজদার মাঝখানে সামান্য বিরতি দিতে হয়, তখন পড়তে হয়"- ❝ আল্লাহু ম্মাগ ফিরলী ওয়ার হামনি ওয়ার যুক্কনী। ❞ অর্থ- হে আল্লাহ, আমাকে ক্ষমা করুন, আমাকে রহম করুন, আমাকে রিজিক দিন।



এইভাবে এক রাকাত নামাজ শেষ হল। অতঃপর পুনরায় দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় রাকাত শুরু করতে হয়। দ্বিতীয় রাকাতে সানা পাঠ করতে হয় না। সানার পরবর্তী নিয়ম গুলো অনুসরণ করতে হবে। দুই রাকাত নামাজ শেষে বসতে হয়।

১১. বৈঠক

দুই রাকাত পর বৈঠকঃ বৈঠকে যা পড়তে হয়- তাশাহুদ বা আত্তাহিয়্যাতুঃ তাশাহুদে পড়তে হয়- ❝ আত্তাহিয়্যাতু লিল্লা-হি, ওয়াছ ছালা-ওয়াতু, ওয়াত-তাইয়্যিবা তু, আচ্ছালা মু আ’লাইকা, আইয়্যুহান নাবিয়্যু, ওয়ারাহ মাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ, আচ্ছালামু আলাইনা, ওয়া আ’লা ইবাদিল্লা হিছ-ছা লিহীন। আশহাদু আল লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু। ❞ অর্থঃ আমাদের সব সালাম শ্রদ্ধা, আমাদের সব নামাজ এবং সকল প্রকার পবিত্রতা একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে। হে নবী, আপনার প্রতি সালাম, আপনার উপর আল্লাহর রহমত এবং অনুগ্রহ বর্ষিত হউক । আমাদের ও আল্লাহর নেক বান্দাদের উপর আল্লাহর রহমত এবং অনুগ্রহ বর্ষিত হউক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই, আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহর বান্দা এবং রাসুল।

১২. দরুদ শরীফ

দরুদ শরীফঃ তাশাহুদ বা আত্তাহিয়্যাতুর পর পড়তে হয়-
❝ আল্লহুম্মা ছাল্লি আ’লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা ছাল্লাইতা আ’লা ইব্রহীমা ওয়া আ’লা আ-লি ইব্রহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজী-দ্ ।
আল্লাহুম্মা বারিক্ আ’লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আ’লি মুহাম্মাদিন, কামা বা-রাকতা আ’লা ইব্রহীমা ওয়া আ’লা আ’লি ইব্রহীমা ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ। ❞
অর্থ- হে আল্লাহ, দয়া ও রহমত করুন হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর প্রতি এবং তার বংশধরদের প্রতি, যেমন রহমত করেছেন হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ও তার বংশধরদের উপর। নিশ্চই আপনি উত্তম গুনের আধার এবং মহান। হে আল্লাহ, বরকত নাযিল করুন হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর প্রতি এবং তার বংশধরদের প্রতি, যেমন করেছেন হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ও তার বংশধরদের উপর। নিশ্চই আপনি প্রশংসার যোগ্য ও সম্মানের অধিকারী।

১২. দোয়ায়ে মাসূরা

দোয়ায়ে মাসূরাঃ দরুদ শরীফ পাঠের পর পড়তে হয়- ❝ আল্লা-হুম্মা ইন্নী জ্বলামতু নাফসী জুলমান কাছীরও ওয়ালা ইয়াগফিরু যুনূবা ইল্লা আনতা ফাগ্ ফিরলী মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা ওয়ার হামনী ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহীম। ❞ অর্থ- হে মহান আল্লাহ, আমি আমার নিজের উপর অনেক জুলুম করেছি (অর্থাৎ অনেক গুনাহ/পাপ করেছি) কিন্তু আপনি ব্যতীত অন্য কেহ গুনাহ মাফ করতে পারে না। অতএব হে আল্লাহ অনুগ্রহ পূর্বক আমার গুনাহ মাফ করে দিন এবং আমার প্রতি সদয় হোন; নিশ্চই আপনি অতি ক্ষমাশীল ও দয়ালু । যদি নামাজ দুই রাকাতের হয় তবে দুই রাকাতের বৈঠকে তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ, দোয়ায়ে মাসূরা পাঠের পর সালাম ফিরাতে হবে।

যদি নামজ তিন রাকাতের হয় তবে দুই রাকাত নামাজ শেষে অর্থাৎ দুই রাকাতের বৈঠকে শুধু তাশাহুদ বা আত্তাহিয়্যাতু পাঠ করে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। দাঁড়িয়ে সানা পাঠ করতে হয় না। সানার পরবর্তী নিয়ম গুলো অনুসরণ করতে হবে। প্রথম রাকাতের নিয়মে আরো এক রাকাত নামাজ আদায় করে তৃতীয় রাকাত সম্পন্ন করতে হবে। তৃতীয় রাকাতের শেষে বসতে হবে। শেষ বৈঠকে বসে তাশাহুদ বা আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ শরীফ ও দোয়া মাসূরা পাঠ করে সালাম ফিরিয়ে নিতে হবে।

নামাজ যদি চার রাকাতের হয় তবে দুই রাকাত নামাজ শেষে অর্থাৎ দুই রাকাতের বৈঠকে শুধু তাশাহুদ বা আত্তাহিয়্যাতু পাঠ করে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। দাঁড়িয়ে সানার পরবর্তী অংশ পাঠের মাধ্যমে প্রথম রাকাতের নিয়মে আরো এক রাকাত নামাজ আদায় করে তৃতীয় রাকাত নামাজ সম্পন্ন করতে হবে। তৃতীয় রাকাত শেষে না বসে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। পুনরায় সানার পরবর্তী অংশ পাঠের মাধ্যমে আরো এক রাকাত নামাজ আদায় করে চতুর্থ রাকাত সম্পন্ন করতে হবে। চতুর্থ রাকাতের পর বৈঠকে অর্থাৎ শেষ বৈঠকে তাশাহুদ বা আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ শরীফ ও দোয়া মাসূরা পাঠ করে সালাম ফিরিয়ে নিতে হবে।


১২. দোয়া কুনুত

❝ আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাইনুকা ওয়া নাসতাগফিরুকা ওয়া নুমিনুবিকা ওয়া নাতাওয়াক্কালু আলাইকা ওয়া নুছনি আলাইকাল খাইর; ওয়া নাশকুরুকা ওয়া লা নাকফুরুকা; ওয়া নাখলাঊ ওয়া নাতরুকু মাইঁইয়াফঝুরুকা; আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না'বুদু; ওয়া লাকা নুসাল্লি ওয়া নাসঝুদু; ওয়া ইলাইকা নাসআ ওয়া নাহফিদু; নারঝু রাহমাতাকা ওয়া নাখশা আজাবাকা; ইন্না আজাবাকা বিলকুফফারি মুলহিক্ব।’ ❞ অনুবাদ : হে আল্লাহ! আমরা আপনারই সাহায্যপ্রার্থী এবং একমাত্র আপনার কাছেই ক্ষমাপ্রার্থী। আপনার উপর আমরা ঈমান এনেছি এবং আপনার উপরই ভরসা করি, আপনার উত্তম প্রশংসা করি, আপনার শোকর আদায় করি, আপনার প্রতি অকৃতজ্ঞ হই না, যারা আপনার নাফরমানী করে, তাদেরকে পরিত্যাগ করি এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করি। হে আল্লাহ! আমরা আপনারই ইবাদাত করি, আপনার জন্যই নামাজ পড়ি এবং আপনার জন্যই সিজদা করি, আপনার দিকেই ধাবিত হই, আপনার হুকুম পালনের জন্যই প্রস্তুত থাকি, আপনার দয়ার আশা করি, আপনার শাস্তিকে ভয় পাই। নিঃসন্দেহে আপনার শাস্তি ভোগ করবে কাফির সম্প্রদায়।

No comments

Powered by Blogger.